ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় স্বামীর লাথিতে গর্ভবতী স্ত্রীর মৃত্যু

চকরিয়া অফিস:

চকরিয়া পৌরএলাকায় যৌতুক লোভী স্বামী আবদুল করিমের (৩০) লাথিতে গর্ভবতী স্ত্রী নুরুচ্ছফা বেগমের মর্মান্তিক মৃত্যুতে হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। হত্যার পর পাষন্ড স্বামী পালিয়ে গেছেন। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পালাকাটা লাইল্যাবরপাড়ায় এঘটনা ঘটে।

নুরুচ্ছফা বেগমের স্বজনরা জানান, চকরিয়া পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের পালাকাটা লাইল্যাবরপাড়ার আবদুল হাকিমের কন্যা নুরুচ্ছফা বেগমের সাথে চার বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে একই গ্রামের মাতব্বরপাড়ার মৃত ছিদ্দিক আহমদের পুত্র দুবাই প্রবাসী আবদুল করিমের মধ্যে। প্রেমের সম্পর্কের কারণে তারা অন্যত্রে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যস্থায় স্বামী আবদুল করিমকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার সম্মতি দিয়ে তাদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ দেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে সুখী ও আনন্দে অতিবাহিত করলেও মাঝে মধ্যে স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতেন করিম। এরইমধ্যে শ্বাশুর আবদুল হাকিম যৌতুকের দেড় লাখ টাকা আবদুল করিমকে পরিশোধ করেনি। কিন্তু প্রায়ই সময় করিম তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য মারধর করতেন। একপর্যায়ে স্বামীর অমানষিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পিতার বাড়িতে চলে যান স্ত্রী নুরুচ্ছফা।

স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, দুইজনের বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকবার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জামাল হোসেন ও চিরিঙ্গা ইউপি সদস্য জাফর আলম মিমাংসা করার চেষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু সমাধান করতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে স্ত্রী নুরুচ্ছফা বাদি হয়ে স্বামীর আবদুল করিমের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জজকোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং ৯১/২০১৪) দায়ের করেন। ওইসময় করিম গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথা নিয়ে দুবাই চলে যায়। কয়েক বছর পর করিম দুবাই থেকে দেশে ফিরে এসে স্ত্রী নুরুচ্ছফাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। করিম দুবাই থেকে আসার পর তাদের মধ্যে সুখী জীবন অতিবাহিত করলেও পূনরায় ওই টাকার জন্য চাপ দিতেন।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পালাকাটা লাইল্যাবরপাড়ায় শ্বাশুর বাড়িতে যৌতুকের বিষয় নিয়ে স্বামী আবদুল করিম ও স্ত্রী নুরুচ্ছফা বেগমের মধ্যে ঝগড়া হয়। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। একপর্যায়ে করিম ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে লাথি মারলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে নুরুচ্ছফার স্বজনরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে চকরিয়া থানা পুলিশকে খবর দেন। তার আত্মীয়রা জানান, নুরুচ্ছফা চার মাসের গর্ভবতী ছিলেন। ওইদিন রাত ৯টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান, মৃত্যু অবস্থায় নুরুচ্ছফাকে উদ্ধার করা হয়। পরে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে কেউ অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: